Saturday 3 July 2021

প্রাইভেট ব্যাংকের আবেদন সেবা বন্ধের বার্তা!


আমরা প্রাইভেট ব্যাংকের আবেদনের কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। কারণ এই কাজ যে করে নেয় তারও পোষায় না আর যে করে দেয় তার মোটেও পোষায় না, শুধুই টাইম লস করা হয়। কারণ—

১) সরকারি চাকরির আবেদনে পার্সোনাল ইনফরমেশন, এডুকেশনাল কোয়ালিফিকেশনস, ঠিকানা এবং ফোন নাম্বার এই চারটা বিষয়ের তথ্য এবং ফটো ও সিগনেচার দিলেই হয় আর প্রাইভেট ব্যাংকের আবেদনে সেই ব্যাংকের ওয়েবসাইটে গিয়ে বিডিজবস এর অ্যাকাউন্ট কমপ্লিট করার মতো অ্যাপ্লিকেন্ট'স প্রোফাইল কমপ্লিট করতে হয়, সেখানে পার্সোনাল ইনফরমেশন, এডুকেশনাল কোয়ালিফিকেশনস, ঠিকানা, ফোন নাম্বার, ই-মেইল এসব ছাড়াও স্কিলস (ল্যাঙ্গুয়েজ স্কিল, কম্পিউটার স্কিল, স্পেশাল স্কিল), ট্রেনিং এর তথ্যাদি, জব এক্সপেরিয়েন্স/ এমপ্লয়মেন্ট স্টেটাস, স্পেশালাইজেশন, এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিস ইত্যাদি এবং রেফারেন্স এতোকিছুর তথ্য দিতে হয়। কোনো কোনো প্রাইভেট ব্যাংকের ক্ষেত্রে আবার ই-মেইল ভেরিফিকেশন করতে হয় অর্থাৎ ই-মেইলে অ্যাক্টিভেশন লিংক গেলে আবেদনকারীকে সেই লিংকে ক্লিক করে আবেদনের প্রোফাইল অ্যাকটিভ করতে হয়।

২) প্রায় প্রত্যেক প্রাইভেট ব্যাংকেই আবেদনের ক্ষেত্রে এমন দু'একটা আনকমন তথ্য চায় যেটার জন্য আবার আবেদনকারীকে নক করতে হয়। এভাবে কোনো আবেদনকারীকে সময়মতো অনলাইনে পাওয়া না গেলে তার কাছে কল করতে হয়। কখনও কখনও আবেদনের সেই পেজটি বেশিক্ষণ রাখতে ধরে খেয়ালের ভুলে তা কেটে গেলে আবার শুরু থেকে কাজ শুরু করতে হয়।

৩) ১০০ কিলোবাইট এর নিচে পাসপোর্ট সাইজের ফটো হলেই সব সরকারি চাকরির আবেদন ফরমে তা আপলোড করা যায় কিন্তু প্রাইভেট ব্যাংকগুলো আবার ফটোর কিলোবাইটের লিমিট নির্ধারণ করে দেয় এবং সেই লিমিট বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন হয়ে থাকে যেমন- ১৫-৩০ কিলোবাইট এর মধ্যে, ৩০-৬০ কিলোবাইট এর মধ্যে, ২০-৪০ কিলোবাইট এর মধ্যে ইত্যাদি। আর কাছে থাকা ফটোকে এরূপ নির্দিষ্ট কিলোবাইটের ফটো বানাতে বিভিন্ন ফটো রিসাইজিং সাইটের বিভিন্ন অপশন চেক করে করে সেভ করতে হয় তারমধ্যে যেটি সেই লিমিটের মধ্যে থাকে সেটি কাজে লাগে।

৪) অনেক গ্রাহক আবার যুক্তি শুরু করে যে, আপনারা তো ডকুমেন্ট প্রিন্ট করে দেন না, ই-মেইলে দেন, তাহলে ১০ টাকা কম নেন, অথচ একটা পেজ প্রিন্ট করতে খরচ হয় ১ টাকা ২০ পয়সা (কাগজ ৮০ পয়সা, কালি ১০ পয়সা এবং প্রিন্টারের অবচয় ব্যয় ২০ পয়সা) আর একটা পেজ প্রিন্ট করা ৫০ সেকেন্ডের কাজ, আসল চার্জ তো নেওয়া হয় ফরম পূরণ করতে যে সময় ব্যয় হয় সেটার জন্য। নিজের টাইপ করা কোনোকিছু প্রিন্ট করতে গেলে তা পৃষ্ঠাপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা নেয় এটা প্রিন্টিং ব্যবসার প্রফিট।

৫) অনেক কম্পিউটারের দোকানে প্রাইভেট ব্যাংকের আবেদন করে দেয়; তবে তারা শুধু সরকারি চাকরির আবেদনের মতো পার্সোনাল ইনফরমেশন, এডুকেশনাল কোয়ালিফিকেশনস, ঠিকানা, ফোন নাম্বার, ই-মেইল এসব তথ্য দিয়ে আবেদন শেষ করে দেয়। বাকি তথ্যগুলো ফাঁকা রেখে দেয়। কিন্তু এরূপ অসম্পূর্ণ আবেদন করে কোনো লাভই নেই। তারা এরূপ কাজ করে দিয়ে ৩০-৪০ টাকা নেয়। কিন্তু আমাদের পক্ষে এরূপ অসম্পূর্ণ ও ফাঁকিবাজির কাজ করা সম্ভব নয়।

৬) অধিকন্তু দেখা যায় গ্রাহক সরকারি চাকরির আবেদন করার ক্ষেত্রে কম্পিউটারের দোকানে ২০ মিনিটের কাজ করে নিয়ে ৩৫-৪০ টাকা দেয় আর আমাদের এখানে প্রাইভেট ব্যাংকের আবেদনের ক্ষেত্রে ৪০ মিনিট থেকে দেড় ঘণ্টার কাজের জন্য ৪০ টাকা দেয়।

এতসব কারণে আমরা প্রাইভেট ব্যাংকের আবেদন করার কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা এখন শুধু সিভি তৈরি, বিডিজবস অ্যাকাউন্ট কমপ্লিট করা এবং সরকারি চাকরির আবেদন এর কাজ করে থাকি।

বার্তা প্রদানে—
মেহেদী হাসান
সিইও, চতরাপিডিয়া বিজনেস প্ল্যাটফর্ম,
চতরাহাট, পীরগঞ্জ, রংপুর।

No comments:

Post a Comment

CPBO

চতরাপিডিয়া বিজনেস অলিম্পিয়াড—২০২১ | Chatrapedia Business Olympiad—2021 চতরাপিডিয়ার উদ্যোগে "চতরাপিডিয়া বিজনেস অলিম্পিয়াড—২০২১" আয়ো...